দ্বিধা বিভক্ত পশ্চিম বর্ধমান বিজেপি নেতৃত্ব
By admin on March 3, 2020 | 10:17 am
বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হবার বাসনায় মরিয়া লক্ষ্মণ
আর,পশ্চিম বর্ধমান জেলা বি জে পি গোষ্ঠী কোঁদলে জেরবার
# বীরূপাক্ষ সেন #
রাজনীতিতে উপদল ও তাকে কেন্দ্র করে কোঁদল নতুন বিষয় নয়। তবে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিজেপিতে উপদলীয় কার্য-কলাপ এই মুহূর্তে কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন। নেতা বড়ো না মন্ত্রী। এই নিয়েই জেরবার। জেলার দুটি লোকসভা আসনে দলীয় নেতা-কর্মীরা যুযুধান দুই শিবিরে বিভক্ত। লক্ষ্মণ ঘোড়ুই কে জেলা সভাপতি পদে পূনর্নিয়োগ করে রাজ্য নেতাদের এখন এমনই অবস্থা। যে, না পারছেন হজম করতে। আর, না পারছেন উগরে দিতে। আশ্চর্যের হলেও সত্যি যে, এই অবস্থায় সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্য নেতাদের কোন হেলদোল নেই। বিলক্ষণ লড়াইটা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বনাম রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। বিগত লোকসভা নির্বাচনে, অসময়ে দলকে জিতিয়ে সেলিব্রেটি থেকে উত্তরণের মন্ত্রী যেমন কেন্দ্রীয় নেতাদের গুডবুকে। তেমনি, সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে আঠারো আসনে এমপি জিতিয়ে রাজ্য সভাপতিও কম কিসের। একুশের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, প্রশ্ন উঠেছে, কে হবেন দলের মুখ। মন্ত্রী না-কি নেতা। দিশেহারা সংগঠনের সাধারণ কর্মীরা। এরাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী আন্দোলনে ক্রমশ শক্তি অর্জন করে ওঠা দলটা এখন প্রকৃত পক্ষে বৃদ্ধির সমস্যায় আক্রান্ত। আর এই সুযোগে ঘর গোছাতে ব্যস্ত রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সুপ্রিমো স্বয়ং দুর্গাপুরে এসে নিদান দিয়ে গেছেন। যদিও পরিস্থিতি সেই তিমিরেই। তথাপি, করে খাওয়া জেলার নেতারা দলের হুমকিতে খানিকটা হলেও সতর্ক। এমনকি বিগত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে ভঙ্গুর দশা সিপিএম ও তার হতাশ জেলা নেতাদেরও পরিস্থিতি বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে। তাই, তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন তারাও। রাজ্যের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে রুদ্ধদ্বার সভায় আঁটোসাঁটো এরিয়া কমিটির নির্বাচনমুখি কর্মসূচির পরিকল্পনা গ্রহণ ও উপদলীয় সমস্যা মেটানোর দাওয়াই। জেলায় জাতীয় কংগ্রেসের অবশ্য তেমন কিছু সমস্যা নেই। কারন, জেলায় দলের অস্তিত্বের মুখেই প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলে। দল না থাকলে তার আর উপদলের ভাবনা কি। সবেমিলে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে, বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও উপযুক্ত নেতার অভাবে জেলায় প্রতিষ্ঠান বিরোধী আন্দোলনে এক ধাক্কায় প্রথম সারিতে উঠে আসলেও সাংগঠনিক বৃদ্ধি কোঁদলের চেহারায় প্রকট হয়ে কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন। কারন, লাগামহীন লক্ষ্মণ যেমন জেলা সংগঠনে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ নেতাদের ছেঁটে ফেলেই কমিটি গঠনে বদ্ধপরিকর। তেমনি জেলার লক্ষ্মণ বিরোধী নেতারাও দলকে বাঁচাতে একটি ছাতার নিচে সমবেত। চাপান উতোর চলছে। জেলায় দলীয় সভ্য সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে প্রায়। তবু, যেকোন মূল্যে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হবার বাসনা ঘনিষ্ঠ মহলে ব্যাক্ত করে জেলা সভাপতি বলেছেন, একুশে দল বাংলার শাসন ক্ষমতা দখল করার সংকল্প গ্রহণ করেছে। সেই ভাবেই সব দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলে সংগঠন গড়ে তোলা দরকার। সভাপতি পদে পূনর্নিবাচিত হতেই তাই ঝেড়ে ফেলা শুরু। এখন তার এমনি অবস্থা, যে ছায়াকেও ভয় পাচ্ছেন। এমনকি জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রের দুই সাংসদ রাজনৈতিক সংগঠনে বিলক্ষণ লক্ষ্মণ বিরোধী। একথা জানতে জেলা কার্যালয়ে যাবার কোন দরকার নেই। শিল্পাঞ্চলের শ্যামাপ্রসাদ ভবনে কান পাতলেই একথা শোনা যায়।
##